পরম বৈষ্ণব শিব
শিবই পরম বৈষ্ণব
কলির কলুষিত শৈব্যরা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে একজন মহামানব আখ্যা দিতে চাই। তারা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বানিয়ে ও কৃষ্ণ বিদ্বেষীতা করে সকলকে কৃষ্ণ বিমুখ করার নানা চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। কলুষিত শৈব্যরা মহাভারতের কয়েকটি শ্লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বলে চালিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু মহাভারতেই যে সমস্ত স্থানে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর বলা হয়েছে এগুলো মানে না এবং মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে বাণাসুরের যুদ্ধে পরম বৈষ্ণব শিব শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি করেন ও পরমেশ্বর বলেন। এগুলো তারা মানে না। এটা কেমন নিয়ম!! আধা আধা মানার থেকে, না মানায় শ্রেয়। তারা কেবল মহাভারতের কয়েকটি শ্লোক মানে, পুরো মহাভারত মানে না।
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শিবের নিকট প্রার্থনা করেন, আসলেই শ্রীকৃষ্ণ কি শিবের ভক্ত?? কিন্তু শাস্ত্র কি বলছে এবিষয়ে!!
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব বললেন,
“ততঃ সাক্ষাজ্জগন্নাথঃ প্রসন্নো ভক্তবৎসলঃ।
অংশাংশেনাত্মনো বৈতান্ পূজয়ামাস কেশবঃ।।
দেবান্ পতন্ দ্বিজান্ হব্যকব্যাশান্ করুণাময়ঃ।
ততঃ প্রভৃতি পূজ্যন্তে ত্রৈলোক্য সচরাচরে।।
ব্রহ্মাদয়ঃ সুরাঃ সর্ব্বে প্রসাদাৎ শাঙ্গর্ধন্বনঃ।
মাঞ্চোবাচ তদা মত্তঃ পূজ্যশ্রেষ্ঠো ভবিষ্যসি।।
ত্বামারাধ্য যদা শম্ভো গ্রহিষ্যামি বরন্তব।
দ্বাপরাদৌ যুগে ভূত্বা কলয়া মানুষাদিষু।।
আগমৈ কল্পিতৈস্ত্বং হি জনান্ মদ্বিমুখান কুরু।
মাঞ্চ গোপয়সে ন স্যাৎ সৃষ্টিরেবোত্তরোত্তরা।
ততস্তং প্রণিপত্যাহমুবাচ পরমেশ্বরম্।।
অর্থঃ অনন্তর সেই সুপ্রসন্ন, ভক্তবৎসল সাক্ষাৎ জগন্নাথ করুণাময় শ্রীকেশব অশাংশে এই সমস্ত দেব, দ্বিজ, পিতৃ এবং যজ্ঞীয় দেবাদিকে পূজা করিয়াছিলেন তদবধি শাঙ্গর্ধন্বা শ্রীকৃষ্ণের অনুগ্রহে ব্রহ্মাদি দেবগণ চরাচর ত্রৈলোক্যে পূজিত হইয়াছেন। সেই সময়ে আমাকে(শিব) কহিয়াছেন, তুমি আমা(শ্রীকৃষ্ণ) হইতে পূজ্য এবং শ্রেষ্ঠ হইবে। হে শম্ভো(শিব)! যৎকালে তোমার আরাধনা করিয়া বরলাভ করিব ও দ্বাপরাদিযুগে মনুষ্যাবতারে প্রকাশ হইব। তুমি কল্পিত আগম শাস্ত্রদ্বারা জনগণকে আমার বিমুখ করিবে এবং আমাকে গোপন রাখিবে তাহাতেই উত্তরোত্তর সৃষ্টি হইবে না, অনন্তর পরমেশ্বরকে(শ্রীকৃষ্ণ) প্রণাম করিয়া কহিলাম(শিব)। (নারদপঞ্চরাত্র)
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ পরম বৈষ্ণব শিবকে বললেন তাকে গোপন রাখতে এবং কল্পিত শাস্ত্র দ্বারা মানুষকে কৃষ্ণবিমুখ করতে। পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞা অনুসারে পরম বৈষ্ণব শিব সেটিই করলেন। যাতে পরমেশ্বরকে গোপন রাখা যায় তার কারণেই পরমেশ্বর দ্বাপরাদিযুগে অবতীর্ণ হলে শিবের আরাধনা করবেন বললেন। যিনি আদি পরমেশ্বর তিনি কারো ভক্ত হতে পারে না। শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে গোপন রাখতে পরম বৈষ্ণব শিবের আরাধনা করেন।
কলুষিত শৈব্যরা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বলে লাফালাফির উপক্রম করে। কিন্তু পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞা অনুসারে শিব জগতে পূজ্য এবং পরমেশ্বরকে গোপন রাখতে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শিবের আরাধনা করেন। শৈব্যরা এটি শাস্ত্র থেকে পর্যবেক্ষণ করার চিন্তা করে না।
➡️➡️শিব যে পরম বৈষ্ণব সেটি নিয়ে শাস্ত্রে বলছে,
নিম্নগানাং যথা গঙ্গা দেবানামচ্যুতো যথা।
বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভুঃ পুরাণানামিদং তথা।।
অর্থঃ নদীগণের মধ্যে গঙ্গা, দেবগণের মধ্যে বিষ্ণু এবং বৈষ্ণবগণের মধ্যে শম্ভু(শিব) যেরুপ শ্রেষ্ঠ, সেইরুপ পুরাণগণের মধ্যে এই শ্রীমদ্ভাগবত শ্রেষ্ঠ হইয়া থাকে। (ভাগবত- ১২/১৩/১৬)
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত:
স জজ্ঞে শূদ্রযোনী চ পিতুঃ শাপেন দৈবতঃ।
বিষ্ণুপ্রসাদং ভুক্ত্বা চ বভূব ব্রহ্মণঃ সুতঃ।।
বিমুক্তস্তাতশাপেন সম্প্রাপ্য জ্ঞানমুত্তমম্।
প্রতিজন্মস্মৃতিস্তস্য কৃষ্ণমন্ত্রপ্রসাদতঃ।।
পিতুঃ সকাশাদাগত্য সম্প্রাপ্য চন্দ্রশেখরাৎ।
শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রমতুলং স্বর্গমন্দাকিনীতটে।।
অর্থঃ তিনি(নারদ) পিতার শাপে দেবাংশে শূদ্রযোনীতে জন্মগ্রহণ করিলেন এবং বিষ্ণুপ্রসাদ ভক্ষণ করিয়া পূণর্বার ব্রহ্মার পুত্র হইলেন। কৃষ্ণমন্ত্রপ্রভাবে তাহার প্রত্যেক জন্ম বৃত্যন্ত স্মরণ ছিল, এক্ষণে পিতার শাপ হইতে বিমুক্ত হইয়া ও উত্তম জ্ঞান লাভ করিয়া পিতার নিকটে উপস্থিত হইলেন এবং স্বর্গমন্দাকিনীতীরে মহাদেবের নিকটে অনুপম কৃষ্ণমন্ত্র লাভ করিলেন। (নারদপঞ্চরাত্র-১/১৫/২-৪)
কৃষ্ণেন ব্রহ্মণে দত্তং গোলোকে বিরাজতটে।
নিরাময়ে ব্রহ্মলোকে মহ্যং দত্তঞ্চ ব্রহ্মণা।।
অর্থঃ এই পঞ্চরাত্র মন্ত্রজ্ঞান পূর্বে গোলোকে বিরজাতটে শ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মাকে প্রদান করেন, তদনন্তর নিরাময় ব্রহ্মলোকে ব্রহ্মা আমাকে(শিব) প্রদান করেন। (নারদপঞ্চরাত্র- ২/১/১৩)
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব বললেন,
ময়া শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রশ্চ কৃষ্ণালয়ে মুনে পুরা।
গোলোকে বিরজাতীরে নীরে ক্ষীরনিভেহমহলে।।
অর্থঃ হে মুনে! পূর্ব্বে কৃষ্ণালয় গোলোকে বিরজাতীরে ক্ষীরসদৃশ অমল জলে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্র জপ করিয়াছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ২/২/১৯)
অর্থ্যাৎ, নারদমুনি মহাদেবের নিকট হতে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত হন এবং মহাদেব স্বয়ং ব্রহ্মার নিকট হতে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছেন।
➡️➡️ শ্রীশিব নারদমুনিকে বললেন,
পঞ্চবক্তেণ সততং তন্নামগুণকীর্ত্তণম।
করোমি ভার্য্যয়া সার্দ্ধং পুত্রাভ্যাঞ্চাপি নারদ।।
অর্থঃ হে নারদ, আমি পঞ্চমুখে সতত তাহার(শ্রীকৃষ্ণ) নাম ও গুণকীর্ত্তন করি। আমি, পার্ব্বতী, কার্ত্তিক ও গণেশের সহিত সতত নাম কীর্ত্তন করিয়া থাকি। (নারদপঞ্চরাত্র)
➡️➡️শ্রীভগবান বললেন,
মৎপ্রাপ্তয়েহজেশসুরাসুরাদয়স্তপ্যন্ত উগ্রং তপ ঐন্দ্রিয়েধিয়ঃ।
ঋতে ভবৎপাদপরায়ণান্ন মাং বিন্দন্ত্যহং ত্বদ্ধৃ দয়া যতোহজিত।।
অর্থঃ হে অজিত, ইন্দ্রিয়সুখভোগবিষয়ে আবিষ্টাচিত্ত ব্রহ্মা, রুদ্র এবং অন্যান্য সুর ও অসুরগণ আমাকে প্রাপ্ত হইবার জন্য উগ্র তপস্যা করিয়া থাকেন। কিন্তু ভবদীয় পাদানুরক্তি ব্যতীত তাঁহারা আমার কটক্ষবিলসিত ঐশর্য্য লাভ করিতে পারেন না। যেহেতু আপনাতেই আমার হৃদয় নিহিত রহিয়াছে। অতএব আমি আপনার ভক্তকেই অনুগ্রহ করিয়া থাকি, অপরে আমার অনুগ্রহ লাভ করিতে পারে না। (ভাগবত- ৫/১৮/২২)
➡️➡️ পরম বৈষ্ণব শিব শ্রীপার্বতীকে বললেন,
“তমেব তপসা নিত্যং ভজামি স্তৌমি চিন্তয়ে।
তেনাদ্বিতীয়মহিমো জগৎপূজ্যোহস্মি পার্ব্বতি।।”
অর্থঃ হে পার্বতী, আমি তপস্যা দ্বারা তাহাকেই(বিষ্ণু) নিত্য ভজনা, স্তব এবং ধ্যান করিয়া থাকি, তাহাতেই আমি জগৎপূজ্য এবং অদ্বিতীয় মহিমান্বিত হইয়াছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/৩/৪)
➡️➡️শ্রীপার্বতী পরম বৈষ্ণব শ্রীশিবকে বললেন,
“অহো সর্ব্বেশ্বরো বিষ্ণুঃ সর্ব্বদেবোত্তমোত্তমঃ।
ভবদাদিগুরুর্ম্মূঢ়ৈঃ সামান্য ইব লক্ষ্যতে।।”
অর্থঃ বিষ্ণুই সকলের ঈশ্বর ও তিনিই সর্বোৎকৃষ্ট দেবতা এবং আপনার(শিব) আদিগুরু হন। অহো! মুঢ়জনেরা সামান্য বোধ করিয়া থাকে। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/৩/২১০)
➡️➡️শ্রীমহাদেব বললেন,
“অকালমৃত্যুহরণং সর্ব্বব্যাধীবিনাশনম্।
বিষ্ণোঃ পাদোদকং পুণ্যং শিরসা ধারয়াম্যহম্।।”
অর্থঃ অকালমৃত্যনিবারক, সকল ব্যাধিনিনাশক শ্রীবিষ্ণুর পবিত্র পাদোদক মস্তকে ধারণ করিতেছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/১১/২০)
➡️➡️পদ্মপুরাণে শ্রীশিব সতীকে বললেন,
“রাম রামেতি রামেতি রাম রামেতি রামেতি সহস্র নামাভীষ তুল্যং রামনাম বর্ণনে।”
অর্থঃ আমি পবিত্র নাম রাম, রাম, রাম জপ করি এবং এই মধুর শব্দটিকে উপভোগ করি। শ্রীরামচন্দ্রের এই পবিত্র নাম শ্রীবিষ্ণুর সহস্রনামের সমান।
➡️➡️বৈষ্ণবসকলমধ্যে শিব শ্রেষ্ঠতর।
বিষ্ণুভক্ত নারদেরে কহেন উত্তর।। (বৃহদ্ভাগবত)
অতএব, শ্রীশিবই পরম বৈষ্ণব। তিনি নিত্য পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের ভজনা ও নাম জপ করেন। পরম বৈষ্ণব শিব দ্বারা মোহশাস্ত্র দ্বারা মোহিত হয়ে কল্পিত/কলুষিত শৈব্যরা সেই পরমেশ্বরকেই পরম বৈষ্ণব শিবের ভক্ত বিবেচনা করছে। স্বয়ং পরম বৈষ্ণব শিবই এর সমাধান দিয়েছেন তার বাক্য দ্বারা।
বি:দ্র: পঞ্চরাত্র জ্ঞান মহাভারতে স্বয়ং পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া। এটা অমান্য করা অর্থই মুর্খামী।
ওঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ
জয় শ্রীকৃষ্ণ
হর হর মহাদেব
কলির কলুষিত শৈব্যরা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে একজন মহামানব আখ্যা দিতে চাই। তারা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বানিয়ে ও কৃষ্ণ বিদ্বেষীতা করে সকলকে কৃষ্ণ বিমুখ করার নানা চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। কলুষিত শৈব্যরা মহাভারতের কয়েকটি শ্লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বলে চালিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু মহাভারতেই যে সমস্ত স্থানে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর বলা হয়েছে এগুলো মানে না এবং মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে বাণাসুরের যুদ্ধে পরম বৈষ্ণব শিব শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি করেন ও পরমেশ্বর বলেন। এগুলো তারা মানে না। এটা কেমন নিয়ম!! আধা আধা মানার থেকে, না মানায় শ্রেয়। তারা কেবল মহাভারতের কয়েকটি শ্লোক মানে, পুরো মহাভারত মানে না।
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শিবের নিকট প্রার্থনা করেন, আসলেই শ্রীকৃষ্ণ কি শিবের ভক্ত?? কিন্তু শাস্ত্র কি বলছে এবিষয়ে!!
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব বললেন,
“ততঃ সাক্ষাজ্জগন্নাথঃ প্রসন্নো ভক্তবৎসলঃ।
অংশাংশেনাত্মনো বৈতান্ পূজয়ামাস কেশবঃ।।
দেবান্ পতন্ দ্বিজান্ হব্যকব্যাশান্ করুণাময়ঃ।
ততঃ প্রভৃতি পূজ্যন্তে ত্রৈলোক্য সচরাচরে।।
ব্রহ্মাদয়ঃ সুরাঃ সর্ব্বে প্রসাদাৎ শাঙ্গর্ধন্বনঃ।
মাঞ্চোবাচ তদা মত্তঃ পূজ্যশ্রেষ্ঠো ভবিষ্যসি।।
ত্বামারাধ্য যদা শম্ভো গ্রহিষ্যামি বরন্তব।
দ্বাপরাদৌ যুগে ভূত্বা কলয়া মানুষাদিষু।।
আগমৈ কল্পিতৈস্ত্বং হি জনান্ মদ্বিমুখান কুরু।
মাঞ্চ গোপয়সে ন স্যাৎ সৃষ্টিরেবোত্তরোত্তরা।
ততস্তং প্রণিপত্যাহমুবাচ পরমেশ্বরম্।।
অর্থঃ অনন্তর সেই সুপ্রসন্ন, ভক্তবৎসল সাক্ষাৎ জগন্নাথ করুণাময় শ্রীকেশব অশাংশে এই সমস্ত দেব, দ্বিজ, পিতৃ এবং যজ্ঞীয় দেবাদিকে পূজা করিয়াছিলেন তদবধি শাঙ্গর্ধন্বা শ্রীকৃষ্ণের অনুগ্রহে ব্রহ্মাদি দেবগণ চরাচর ত্রৈলোক্যে পূজিত হইয়াছেন। সেই সময়ে আমাকে(শিব) কহিয়াছেন, তুমি আমা(শ্রীকৃষ্ণ) হইতে পূজ্য এবং শ্রেষ্ঠ হইবে। হে শম্ভো(শিব)! যৎকালে তোমার আরাধনা করিয়া বরলাভ করিব ও দ্বাপরাদিযুগে মনুষ্যাবতারে প্রকাশ হইব। তুমি কল্পিত আগম শাস্ত্রদ্বারা জনগণকে আমার বিমুখ করিবে এবং আমাকে গোপন রাখিবে তাহাতেই উত্তরোত্তর সৃষ্টি হইবে না, অনন্তর পরমেশ্বরকে(শ্রীকৃষ্ণ) প্রণাম করিয়া কহিলাম(শিব)। (নারদপঞ্চরাত্র)
পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ পরম বৈষ্ণব শিবকে বললেন তাকে গোপন রাখতে এবং কল্পিত শাস্ত্র দ্বারা মানুষকে কৃষ্ণবিমুখ করতে। পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞা অনুসারে পরম বৈষ্ণব শিব সেটিই করলেন। যাতে পরমেশ্বরকে গোপন রাখা যায় তার কারণেই পরমেশ্বর দ্বাপরাদিযুগে অবতীর্ণ হলে শিবের আরাধনা করবেন বললেন। যিনি আদি পরমেশ্বর তিনি কারো ভক্ত হতে পারে না। শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে গোপন রাখতে পরম বৈষ্ণব শিবের আরাধনা করেন।
কলুষিত শৈব্যরা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে শিবের ভক্ত বলে লাফালাফির উপক্রম করে। কিন্তু পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞা অনুসারে শিব জগতে পূজ্য এবং পরমেশ্বরকে গোপন রাখতে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শিবের আরাধনা করেন। শৈব্যরা এটি শাস্ত্র থেকে পর্যবেক্ষণ করার চিন্তা করে না।
➡️➡️শিব যে পরম বৈষ্ণব সেটি নিয়ে শাস্ত্রে বলছে,
নিম্নগানাং যথা গঙ্গা দেবানামচ্যুতো যথা।
বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভুঃ পুরাণানামিদং তথা।।
অর্থঃ নদীগণের মধ্যে গঙ্গা, দেবগণের মধ্যে বিষ্ণু এবং বৈষ্ণবগণের মধ্যে শম্ভু(শিব) যেরুপ শ্রেষ্ঠ, সেইরুপ পুরাণগণের মধ্যে এই শ্রীমদ্ভাগবত শ্রেষ্ঠ হইয়া থাকে। (ভাগবত- ১২/১৩/১৬)
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত:
স জজ্ঞে শূদ্রযোনী চ পিতুঃ শাপেন দৈবতঃ।
বিষ্ণুপ্রসাদং ভুক্ত্বা চ বভূব ব্রহ্মণঃ সুতঃ।।
বিমুক্তস্তাতশাপেন সম্প্রাপ্য জ্ঞানমুত্তমম্।
প্রতিজন্মস্মৃতিস্তস্য কৃষ্ণমন্ত্রপ্রসাদতঃ।।
পিতুঃ সকাশাদাগত্য সম্প্রাপ্য চন্দ্রশেখরাৎ।
শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রমতুলং স্বর্গমন্দাকিনীতটে।।
অর্থঃ তিনি(নারদ) পিতার শাপে দেবাংশে শূদ্রযোনীতে জন্মগ্রহণ করিলেন এবং বিষ্ণুপ্রসাদ ভক্ষণ করিয়া পূণর্বার ব্রহ্মার পুত্র হইলেন। কৃষ্ণমন্ত্রপ্রভাবে তাহার প্রত্যেক জন্ম বৃত্যন্ত স্মরণ ছিল, এক্ষণে পিতার শাপ হইতে বিমুক্ত হইয়া ও উত্তম জ্ঞান লাভ করিয়া পিতার নিকটে উপস্থিত হইলেন এবং স্বর্গমন্দাকিনীতীরে মহাদেবের নিকটে অনুপম কৃষ্ণমন্ত্র লাভ করিলেন। (নারদপঞ্চরাত্র-১/১৫/২-৪)
কৃষ্ণেন ব্রহ্মণে দত্তং গোলোকে বিরাজতটে।
নিরাময়ে ব্রহ্মলোকে মহ্যং দত্তঞ্চ ব্রহ্মণা।।
অর্থঃ এই পঞ্চরাত্র মন্ত্রজ্ঞান পূর্বে গোলোকে বিরজাতটে শ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মাকে প্রদান করেন, তদনন্তর নিরাময় ব্রহ্মলোকে ব্রহ্মা আমাকে(শিব) প্রদান করেন। (নারদপঞ্চরাত্র- ২/১/১৩)
➡️➡️পরম বৈষ্ণব শিব বললেন,
ময়া শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রশ্চ কৃষ্ণালয়ে মুনে পুরা।
গোলোকে বিরজাতীরে নীরে ক্ষীরনিভেহমহলে।।
অর্থঃ হে মুনে! পূর্ব্বে কৃষ্ণালয় গোলোকে বিরজাতীরে ক্ষীরসদৃশ অমল জলে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্র জপ করিয়াছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ২/২/১৯)
অর্থ্যাৎ, নারদমুনি মহাদেবের নিকট হতে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত হন এবং মহাদেব স্বয়ং ব্রহ্মার নিকট হতে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছেন।
➡️➡️ শ্রীশিব নারদমুনিকে বললেন,
পঞ্চবক্তেণ সততং তন্নামগুণকীর্ত্তণম।
করোমি ভার্য্যয়া সার্দ্ধং পুত্রাভ্যাঞ্চাপি নারদ।।
অর্থঃ হে নারদ, আমি পঞ্চমুখে সতত তাহার(শ্রীকৃষ্ণ) নাম ও গুণকীর্ত্তন করি। আমি, পার্ব্বতী, কার্ত্তিক ও গণেশের সহিত সতত নাম কীর্ত্তন করিয়া থাকি। (নারদপঞ্চরাত্র)
➡️➡️শ্রীভগবান বললেন,
মৎপ্রাপ্তয়েহজেশসুরাসুরাদয়স্তপ্যন্ত উগ্রং তপ ঐন্দ্রিয়েধিয়ঃ।
ঋতে ভবৎপাদপরায়ণান্ন মাং বিন্দন্ত্যহং ত্বদ্ধৃ দয়া যতোহজিত।।
অর্থঃ হে অজিত, ইন্দ্রিয়সুখভোগবিষয়ে আবিষ্টাচিত্ত ব্রহ্মা, রুদ্র এবং অন্যান্য সুর ও অসুরগণ আমাকে প্রাপ্ত হইবার জন্য উগ্র তপস্যা করিয়া থাকেন। কিন্তু ভবদীয় পাদানুরক্তি ব্যতীত তাঁহারা আমার কটক্ষবিলসিত ঐশর্য্য লাভ করিতে পারেন না। যেহেতু আপনাতেই আমার হৃদয় নিহিত রহিয়াছে। অতএব আমি আপনার ভক্তকেই অনুগ্রহ করিয়া থাকি, অপরে আমার অনুগ্রহ লাভ করিতে পারে না। (ভাগবত- ৫/১৮/২২)
➡️➡️ পরম বৈষ্ণব শিব শ্রীপার্বতীকে বললেন,
“তমেব তপসা নিত্যং ভজামি স্তৌমি চিন্তয়ে।
তেনাদ্বিতীয়মহিমো জগৎপূজ্যোহস্মি পার্ব্বতি।।”
অর্থঃ হে পার্বতী, আমি তপস্যা দ্বারা তাহাকেই(বিষ্ণু) নিত্য ভজনা, স্তব এবং ধ্যান করিয়া থাকি, তাহাতেই আমি জগৎপূজ্য এবং অদ্বিতীয় মহিমান্বিত হইয়াছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/৩/৪)
➡️➡️শ্রীপার্বতী পরম বৈষ্ণব শ্রীশিবকে বললেন,
“অহো সর্ব্বেশ্বরো বিষ্ণুঃ সর্ব্বদেবোত্তমোত্তমঃ।
ভবদাদিগুরুর্ম্মূঢ়ৈঃ সামান্য ইব লক্ষ্যতে।।”
অর্থঃ বিষ্ণুই সকলের ঈশ্বর ও তিনিই সর্বোৎকৃষ্ট দেবতা এবং আপনার(শিব) আদিগুরু হন। অহো! মুঢ়জনেরা সামান্য বোধ করিয়া থাকে। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/৩/২১০)
➡️➡️শ্রীমহাদেব বললেন,
“অকালমৃত্যুহরণং সর্ব্বব্যাধীবিনাশনম্।
বিষ্ণোঃ পাদোদকং পুণ্যং শিরসা ধারয়াম্যহম্।।”
অর্থঃ অকালমৃত্যনিবারক, সকল ব্যাধিনিনাশক শ্রীবিষ্ণুর পবিত্র পাদোদক মস্তকে ধারণ করিতেছি। (নারদপঞ্চরাত্র- ৪/১১/২০)
➡️➡️পদ্মপুরাণে শ্রীশিব সতীকে বললেন,
“রাম রামেতি রামেতি রাম রামেতি রামেতি সহস্র নামাভীষ তুল্যং রামনাম বর্ণনে।”
অর্থঃ আমি পবিত্র নাম রাম, রাম, রাম জপ করি এবং এই মধুর শব্দটিকে উপভোগ করি। শ্রীরামচন্দ্রের এই পবিত্র নাম শ্রীবিষ্ণুর সহস্রনামের সমান।
➡️➡️বৈষ্ণবসকলমধ্যে শিব শ্রেষ্ঠতর।
বিষ্ণুভক্ত নারদেরে কহেন উত্তর।। (বৃহদ্ভাগবত)
অতএব, শ্রীশিবই পরম বৈষ্ণব। তিনি নিত্য পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের ভজনা ও নাম জপ করেন। পরম বৈষ্ণব শিব দ্বারা মোহশাস্ত্র দ্বারা মোহিত হয়ে কল্পিত/কলুষিত শৈব্যরা সেই পরমেশ্বরকেই পরম বৈষ্ণব শিবের ভক্ত বিবেচনা করছে। স্বয়ং পরম বৈষ্ণব শিবই এর সমাধান দিয়েছেন তার বাক্য দ্বারা।
বি:দ্র: পঞ্চরাত্র জ্ঞান মহাভারতে স্বয়ং পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া। এটা অমান্য করা অর্থই মুর্খামী।
ওঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ
জয় শ্রীকৃষ্ণ
হর হর মহাদেব
এই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
উত্তরমুছুনEkhono maun keno utaar dao , promaan koro shiv , ling , skanda , shwetashwar Upanishads er madhyome promaan koro je shiv devota parameshwar bhagabaan non
মুছুনEkhono maun keno utaar dao , promaan koro shiv , ling , skanda , shwetashwar Upanishads er madhyome promaan koro je shiv devota ,parameshwar bhagabaan non
মুছুনশিব বিষ্ণু তত্ত্ব নন আবার জীব তত্ত্বও নন, তিনি এক বিশেষ তত্ত্ব। সদাশিব এবং কারণোদকশায়ী মহাবিষ্ণুর মধ্যে তফাৎ কিঞ্চিৎ কিন্তু তফাৎ আছেই। কারণার্ণবশায়ি মহাবিষ্ণু জড়া প্রকৃতি বা মহামায়ার উপর তাঁর দৃষ্টিপাত করলে বিষ্ণু শক্তি দ্বারা দেবী জড় জগৎ সৃজন করেন (তম বৈষ্ণবী শক্তি অনন্ত বীর্য্যা)। মহামায়ার প্রতি ভগবান বিষ্ণুর দৃষ্টিশক্তিই নিরাকার জ্যোতির্লিঙ্গ বা সদাশিব। মহাবিষ্ণুর দৃষ্টির নিরাকার জ্যোতিই শিবলিঙ্গম। এই সদাশিব ভূ-কৈলাশের শিব নন। ইনি বৈকুন্ঠ জগতে বিরজার ওপারে চিন্ময় কৈলাশে নিত্য বিরাজমান, ইনি তমগুণী নন। ইনি কৰ্পূরগৌরম গুণাতীত। জড় জাগতিক শঙ্কর সদাশিবের ছায়া স্বরূপ। দুধ যেমন বিকৃত হয়ে দই হয়ে যায় কিন্তু দুধের তত্ত্ব বিনষ্ট হয়না কিন্তু দই কখনও দুধ হোতে পারেনা ঠিক তেমনই মহাবিষ্ণুই মহামায়ার সাহায্যার্থে সদাশিবে পরিণত হন। বস্তুত মহাবিষ্ণু এবং সদাশিব একই হলেও সদাশিব মহাবিষ্ণুর আদেশানুসারেই কার্য সম্পাদন করেন। এছাড়াও দেব এবং ঈশ্বরে এক বস্তু নন। দেবতারা বিভিন্ন দপ্তরের অধক্ষ্য হয়ে কৃষ্ণের নির্দেশে এবং তাঁর শক্তিতেই কার্য করে থাকেন। আদি দেব বা দেবতাদের মধ্যে শিব শ্রেষ্ঠ সে বিষয়ে দ্বিমত নেই কিন্তু তিনি পরমেশ্বর নন। ভগবান বা পরমব্রহ্ম বা পরমেশ্বর হলেন শ্রী কৃষ্ণ। কৃষ্ণ নিজেকে তিন ভাবে প্রকাশ করেন "ব্রহ্মেতি পরমাত্মেতি ভগবানেতি শব্দতে অর্থাৎ ভগবান ব্রজেন্দ্রনন্দন শ্রী কৃষ্ণ নিরাকার রূপে ব্রহ্ম, চতুর্ভুজ ক্ষিরোদকশায়ী বিষ্ণু রূপে পরমাত্মা এবং স্বয়ং রূপে ভগবান। তিনি অসমর্ধ অর্থাৎ কৃষ্ণের উপরে বা সমপর্যায়ে কেউই নেই কেউই নেই কেউই নেই।
উত্তরমুছুন❤️
মুছুনRudrodev Chakroborty ভগবত মহা পুরাণে বলা আছে বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভু অর্থাৎ বৈষ্ণব এর মধ্যে শম্ভু শ্রেষ্ঠ কিন্তু সেটা মহাদেব কে বলা হয়নি সে শম্ভু অন্য একজন তিনি নারায়ণ ভক্ত ধ্রুবের পুত্র তিনি একজন মানব তার কথা বলা আছে কিন্তু বৈষ্ণব গণ সেই শম্ভু কে শিব বানিয়ে দিয়েছে 😄
উত্তরমুছুন