বেশধারী শৈব (পর্ব ২)
কৃষ্ণই পরমেশ্বর এবং সব কিছুর উৎস।
ইদানিং বেশ কিছু শৈবগণ অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে কৃষ্ণ নিন্দা করতে ব্যস্ত। তাদের প্রতিটি বাক্যের মাধ্যমে কৃষ্ণ নিন্দা লক্ষ্য করা যায়। এসকল শৈবগণ তাদের নিজস্ব পোস্ট এবং বাক্য দ্বারা কৃষ্ণ এবং কৃষ্ণ ভক্তগণের অবমাননা করে যাচ্ছে।
এসকল শৈবগণ কখনও শুদ্ধ শিব ভক্ত নয়। যারা শুদ্ধ এবং প্রকৃত শিব ভক্ত তারা কখনই কৃষ্ণ নিন্দা করে না। এরা নানা কৌশল অবলম্বন করে কৃষ্ণ নিন্দা করছে।
পূর্বের পোস্টে লিখেছি, কৃষ্ণ নিন্দা করলে নরক প্রাপ্তি ঘটবে এবং বৈষ্ণব নিন্দা বড় অপরাধ যার ক্ষমা নাই। কিন্তু এসকল শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা ও বৈষ্ণব নিন্দাতে পরম তৃপ্তি লাভ করে। সুতরাং, এদের মুক্তি নাই। এদের নরক প্রাপ্তি ব্যতীত অন্য উপায় নাই।
এসকল অসাধু শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা করে সকল দেবতা এবং শৈবগণের আরাধ্য শিবকেও নিন্দা করছে সেই ভেদবুদ্ধিহীন তারা।
শ্রীভগবান শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার দশম অধ্যায়ের ২৩ নং শ্লোকে বলছেন,
"রুদ্রানাং শঙ্করচাস্মি"
অর্থ- একাদশ রুদ্রের মধ্যে আমিই শঙ্কর বা শিব।
অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণই শিব কিন্তু মুর্খ শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা করছে এবং জানে না তারা শিবকেও নিন্দা করছে। এদের দ্বারা শ্রী শিব স্বয়ং নিন্দিত হচ্ছেন।
গীতার ৪র্থ অধ্যায়ের ১ম শ্লোকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,
"ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহ মব্যয়ম্ বিবস্বান্নবে প্রাহ মনুরিক্ষাকবেহব্রবীৎ।
তাৎপর্য হলো - ভগবান শ্রী কৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন, "অামি পূর্বে সূর্যদেব বিবস্বানকে এই অব্যয় নিষ্কাম কর্ম্ম সাধ্য জ্ঞান প্রদান করেছিলাম। সূর্যদেব তাহা মানব জাতির জনক মনুকে বলে ছিলেন। পরে মনু তাঁর পুত্র ইক্ষাকুকে বলেছিলেন।
অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণই আদিতে এই গুহ্য এই গীতা জ্ঞান সূর্যদেবকে দিয়েছিলেন, একদল অজ্ঞ লোক আছে তারা শ্রীকৃষ্ণকে আদিতে খুঁজে পায়না। এরা নিশ্চয় মুর্খ নয়তো অন্ধ।
শ্রী চৈতন্য চরিতামৃতে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণই হচ্ছেন ঈশ্বর। সমস্ত অবতার তাঁর থেকেই উদ্ভূত।
অারো বলা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণই হচ্ছেন পরম তত্ত্ব এবং পরম সত্য। তিনি সর্ব্ব ব্যাপী ব্রহ্ম, পরমাত্মা, ও পরমেশ্বর ভগবান রুপে সর্ব্বত্র বিরাজ করছেন।
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে বলা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন সমস্ত ঈশ্বরেরও ঈশ্বর। সমস্ত উপনিষদের গুঢ় তত্ত্ব এবং সর্ব্ব বেদের সার।
শ্রীভগবান গীতাতে বলেছেন,
মত্ত:পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয়।
ময়ি সর্বমিদং প্রোতং সূত্রে মনিগনা ইব।।(গীতা :৭/৭)
অর্থ: হে ধনঞ্জয়! আমার থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই।সুত্রে যেমন মনিসমূহ গাঁথা থাকে তেমনিই সমস্ত
বিশ্বই আমাতে ওতঃপ্রোতভাবে অবস্থান করে।
বৈদিক ভাষ্যমতে শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের (৩/১০) এই শ্লোকটির উল্লেখ আছে,
ততো যদুত্তরতরং তদরুপমনাময়ম।
য এতদ্ বিদুরমৃতাস্তে ভবন্ত্যথেতরে দুঃখমেবাপিয়ন্তি।।
অর্থাৎ, এই জড় জগতে ব্রহ্মা হচ্ছেন প্রথম জীব।সুর,অসুর ও মানুষের মধ্যে তিনিই হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ। কিন্তু
ব্রহ্মারও উর্ধ্বে এক অপ্রাকৃত তত্ত্ব বর্তমান, যার কোন জড় আকৃতি নেই এবং যিনি সব রকমের জড় কলুষ থেকে মুক্ত। তাঁকে যে জানতে পারেন তিনি এই জড় বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে অপ্রাকৃত জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর যারা তাঁকে জানতে পারেনা তারা এই জড় জগতে নানা রকম দুঃখ কষ্ট ভোগ করে।
এবার গীতাতে কি বলা হয়েছে দেখা যাক,
অহং সর্বস্য প্রভবো মত্ত:সর্বং প্রবর্ততে।
ইতি মত্ত্বা ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমন্বিতা।।( গীতা ১০/৮)
অর্থ: আমি জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছু আমার থেকেই প্রবর্তিক হয়।সেই তত্ব অবগত হয়ে পন্ডিতগন শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন।
অর্থাৎ, শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে যে অপ্রাকৃত তত্ত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, গীতাতে সেই অপ্রাকৃত তত্ত্ব শ্রীকৃষ্ণকেই নির্দেশ করছে। অতএব, শ্রীকৃষ্ণই অপ্রাকৃত তত্ত্ব, পরমেশ্বর।
অথর্ব বেদে(গো.তা ১/২৪) এ বলা হয়েছে,
যো
ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্বং যো বৈ বেদাংশ্চ গাপয়তিস্ম কৃষ্ণ।। অর্থাৎ, ব্রহ্মা যিনি পূর্বকালে বৈদিক জ্ঞান প্রদান করেন তিনি সেই জ্ঞান সৃষ্টির আদিতে শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে প্রাপ্ত হন।
তারপর পুণরায় নারায়ণ উপনিষদে (১) বলা হয়েছে,
"অথ পুরুষো হবৈ নারায়ণোহকাময়ত প্রজা :সৃজেয়েতি"
অর্থাৎ, তারপর পরমেশ্বর ভগবান নারায়ণ প্রাণী
সৃষ্টির ইচ্ছা করেন।
উপনিষদে আরো বলা হয়েছে,
নারায়নাদ্ প্রজাপতিঃ প্রজায়তে নারায়নাদ্ ইন্দ্রো জায়তে নারায়নদ্ অষ্টৌ বসবো
জায়ন্তে নারায়নাদ্ একাদশ রুদ্রো
জায়তে নারায়নাদ্
দ্বাদশাদিত্যা:।।
অর্থাৎ, নারায়ণ হতে ব্রহ্মার জন্ম হয়, নারায়ণ হতে অষ্টবসুর জন্ম হয়,নারায়ণ থেকে একাদশ রুদ্রের জন্ম হয় এবং নারায়ণ থেকে দ্বাদশ আদিত্যের জন্ম হয়।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় আছে, নারায়ণের থেকেই ব্রহ্মা, অষ্টবসু, দ্বাদশ আদিত্য এমনি একাদশ রুদ্রের জন্মের কথা বলা হয়েছে।
নারায়ণই সেই অনাদির আদি কৃষ্ণ। তার থেকেই সমস্ত কিছু প্রকাশিত হচ্ছে। একাদশ রুদ্রের মধ্যে শিব অন্যতম। শ্রী শিব পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে সৃষ্টি হন।
সে সম্পর্কে মহা উপনিষদে আরও বলা হয়েছে যে,
শিবের জন্ম হয় পরমেশ্বর ভগবানের ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে।এভাবেই বেদে বলা হয়েছে যে,ব্রহ্মা ও শিবের যিনি সৃষ্টিকর্তা সেই পরমেশ্বর ভগবানই হচ্ছেন সকলের
আরাধ্য।
মোক্ষধর্মে শ্রীকৃষ্ণও বলেছেন,
প্রজাপতিং চ রুদ্রং চাহ্যহমেব সৃজামি বৈ।
তৌ হি মাং ন বিজানীতো মম মায়াবিমোহিতৌ।।
অর্থ: প্রজাপতি, রুদ্র ও অন্য সকলকে আমি সৃষ্টি করেছি,যদিও তারা তা জানেন না।কারন,তাঁরা আমার মায়াশক্তির দ্বারা বিমোহিত।
বরাহ পুরাণেও বলা হয়েছে -----
নারায়ণ:পরো দেবস্তস্মাজ্জাতশ্চতুর্মুখ:।
তস্মাত্ রুদ্রোহভবদ্ দেব:স চ সর্বজ্ঞতাং গত:।।
অর্থ: নারায়ন হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান আর তার থেকে ব্রহ্মারও জন্ম হয়, তার থেকে শিবের
জন্ম হয়।
বেদে আরও বলা হয়েছে,
ব্রম্মণ্যো দেবকীপুত্র :।
অর্থাৎ, দেবকীপুত্র শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান।
(নারায়ন উপনিষদ ৪)
তারপর বলা হয়েছে,
একো বৈ নারায়ন আসীন্ ন ব্রম্ম না ঈশানো নাপো নাগ্নি -সমৌ নেমে দ্যাবা পৃথিবী ন নক্ষত্রাণি ন সূর্য।
অর্থাৎ, সৃষ্টির আদিতে কেবল পরম পুরুষ নারায়ন ছিলেন।ব্রম্মা ছিল না,শিব ছিল না, অগ্নি ছিল না,চন্দ্র ছিল না,আকাশে নক্ষত্র ছিল না এবং সূর্য ছিল না। ( মহা উপনিষদ-১)।
গীতাতে আরও বলা হয়েছে,
পরং ব্রহ্ম পরং ধাম পবিত্রং পরমং ভবান্।
পুরুষং শাশ্বতং দিব্যমাদিদেবমজং বিভূম।।
আহুস্তামৃষয়:সর্বে দেবর্ষির্নারিদস্তথা।
অসিতো দেবলো ব্যাস:স্বয়ং চৈব ব্রবীষি যে।(গীতা১০/১২-১৩)
অর্থ: অর্জুন বললেন,তুমি পরম ব্রহ্ম,পরম ধাম,পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ। তুমি নিত্য,দিব্য আদি দেব,অজ ও বিভূ।দেবর্ষি নারদ,অসিত,দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করেছেন। এবং তুমি নিজেও এখন তা আমাকে বলছো।
মুর্খেরা এখনও কি পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে নিন্দা করবেন নাকি মানুষ বলবেন। শ্রীকৃষ্ণ সকল আরাধ্যেও আরাধ্য, তিনিই পরমাত্মা। নাস্তিক পন্থি অজ্ঞ শৈবরা সঠিক তত্ত্ব না জেনে পরমেশ্বরকে নিন্দা করে।
ইদানিং বেশ কিছু শৈবগণ অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে কৃষ্ণ নিন্দা করতে ব্যস্ত। তাদের প্রতিটি বাক্যের মাধ্যমে কৃষ্ণ নিন্দা লক্ষ্য করা যায়। এসকল শৈবগণ তাদের নিজস্ব পোস্ট এবং বাক্য দ্বারা কৃষ্ণ এবং কৃষ্ণ ভক্তগণের অবমাননা করে যাচ্ছে।
এসকল শৈবগণ কখনও শুদ্ধ শিব ভক্ত নয়। যারা শুদ্ধ এবং প্রকৃত শিব ভক্ত তারা কখনই কৃষ্ণ নিন্দা করে না। এরা নানা কৌশল অবলম্বন করে কৃষ্ণ নিন্দা করছে।
পূর্বের পোস্টে লিখেছি, কৃষ্ণ নিন্দা করলে নরক প্রাপ্তি ঘটবে এবং বৈষ্ণব নিন্দা বড় অপরাধ যার ক্ষমা নাই। কিন্তু এসকল শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা ও বৈষ্ণব নিন্দাতে পরম তৃপ্তি লাভ করে। সুতরাং, এদের মুক্তি নাই। এদের নরক প্রাপ্তি ব্যতীত অন্য উপায় নাই।
এসকল অসাধু শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা করে সকল দেবতা এবং শৈবগণের আরাধ্য শিবকেও নিন্দা করছে সেই ভেদবুদ্ধিহীন তারা।
শ্রীভগবান শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার দশম অধ্যায়ের ২৩ নং শ্লোকে বলছেন,
"রুদ্রানাং শঙ্করচাস্মি"
অর্থ- একাদশ রুদ্রের মধ্যে আমিই শঙ্কর বা শিব।
অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণই শিব কিন্তু মুর্খ শৈবগণ কৃষ্ণ নিন্দা করছে এবং জানে না তারা শিবকেও নিন্দা করছে। এদের দ্বারা শ্রী শিব স্বয়ং নিন্দিত হচ্ছেন।
গীতার ৪র্থ অধ্যায়ের ১ম শ্লোকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,
"ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহ মব্যয়ম্ বিবস্বান্নবে প্রাহ মনুরিক্ষাকবেহব্রবীৎ।
তাৎপর্য হলো - ভগবান শ্রী কৃষ্ণ অর্জুনকে বললেন, "অামি পূর্বে সূর্যদেব বিবস্বানকে এই অব্যয় নিষ্কাম কর্ম্ম সাধ্য জ্ঞান প্রদান করেছিলাম। সূর্যদেব তাহা মানব জাতির জনক মনুকে বলে ছিলেন। পরে মনু তাঁর পুত্র ইক্ষাকুকে বলেছিলেন।
অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণই আদিতে এই গুহ্য এই গীতা জ্ঞান সূর্যদেবকে দিয়েছিলেন, একদল অজ্ঞ লোক আছে তারা শ্রীকৃষ্ণকে আদিতে খুঁজে পায়না। এরা নিশ্চয় মুর্খ নয়তো অন্ধ।
শ্রী চৈতন্য চরিতামৃতে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণই হচ্ছেন ঈশ্বর। সমস্ত অবতার তাঁর থেকেই উদ্ভূত।
অারো বলা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণই হচ্ছেন পরম তত্ত্ব এবং পরম সত্য। তিনি সর্ব্ব ব্যাপী ব্রহ্ম, পরমাত্মা, ও পরমেশ্বর ভগবান রুপে সর্ব্বত্র বিরাজ করছেন।
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে বলা হয়েছে, শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন সমস্ত ঈশ্বরেরও ঈশ্বর। সমস্ত উপনিষদের গুঢ় তত্ত্ব এবং সর্ব্ব বেদের সার।
শ্রীভগবান গীতাতে বলেছেন,
মত্ত:পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয়।
ময়ি সর্বমিদং প্রোতং সূত্রে মনিগনা ইব।।(গীতা :৭/৭)
অর্থ: হে ধনঞ্জয়! আমার থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই।সুত্রে যেমন মনিসমূহ গাঁথা থাকে তেমনিই সমস্ত
বিশ্বই আমাতে ওতঃপ্রোতভাবে অবস্থান করে।
বৈদিক ভাষ্যমতে শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের (৩/১০) এই শ্লোকটির উল্লেখ আছে,
ততো যদুত্তরতরং তদরুপমনাময়ম।
য এতদ্ বিদুরমৃতাস্তে ভবন্ত্যথেতরে দুঃখমেবাপিয়ন্তি।।
অর্থাৎ, এই জড় জগতে ব্রহ্মা হচ্ছেন প্রথম জীব।সুর,অসুর ও মানুষের মধ্যে তিনিই হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ। কিন্তু
ব্রহ্মারও উর্ধ্বে এক অপ্রাকৃত তত্ত্ব বর্তমান, যার কোন জড় আকৃতি নেই এবং যিনি সব রকমের জড় কলুষ থেকে মুক্ত। তাঁকে যে জানতে পারেন তিনি এই জড় বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে অপ্রাকৃত জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর যারা তাঁকে জানতে পারেনা তারা এই জড় জগতে নানা রকম দুঃখ কষ্ট ভোগ করে।
এবার গীতাতে কি বলা হয়েছে দেখা যাক,
অহং সর্বস্য প্রভবো মত্ত:সর্বং প্রবর্ততে।
ইতি মত্ত্বা ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমন্বিতা।।( গীতা ১০/৮)
অর্থ: আমি জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছু আমার থেকেই প্রবর্তিক হয়।সেই তত্ব অবগত হয়ে পন্ডিতগন শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন।
অর্থাৎ, শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে যে অপ্রাকৃত তত্ত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, গীতাতে সেই অপ্রাকৃত তত্ত্ব শ্রীকৃষ্ণকেই নির্দেশ করছে। অতএব, শ্রীকৃষ্ণই অপ্রাকৃত তত্ত্ব, পরমেশ্বর।
অথর্ব বেদে(গো.তা ১/২৪) এ বলা হয়েছে,
যো
ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্বং যো বৈ বেদাংশ্চ গাপয়তিস্ম কৃষ্ণ।। অর্থাৎ, ব্রহ্মা যিনি পূর্বকালে বৈদিক জ্ঞান প্রদান করেন তিনি সেই জ্ঞান সৃষ্টির আদিতে শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে প্রাপ্ত হন।
তারপর পুণরায় নারায়ণ উপনিষদে (১) বলা হয়েছে,
"অথ পুরুষো হবৈ নারায়ণোহকাময়ত প্রজা :সৃজেয়েতি"
অর্থাৎ, তারপর পরমেশ্বর ভগবান নারায়ণ প্রাণী
সৃষ্টির ইচ্ছা করেন।
উপনিষদে আরো বলা হয়েছে,
নারায়নাদ্ প্রজাপতিঃ প্রজায়তে নারায়নাদ্ ইন্দ্রো জায়তে নারায়নদ্ অষ্টৌ বসবো
জায়ন্তে নারায়নাদ্ একাদশ রুদ্রো
জায়তে নারায়নাদ্
দ্বাদশাদিত্যা:।।
অর্থাৎ, নারায়ণ হতে ব্রহ্মার জন্ম হয়, নারায়ণ হতে অষ্টবসুর জন্ম হয়,নারায়ণ থেকে একাদশ রুদ্রের জন্ম হয় এবং নারায়ণ থেকে দ্বাদশ আদিত্যের জন্ম হয়।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় আছে, নারায়ণের থেকেই ব্রহ্মা, অষ্টবসু, দ্বাদশ আদিত্য এমনি একাদশ রুদ্রের জন্মের কথা বলা হয়েছে।
নারায়ণই সেই অনাদির আদি কৃষ্ণ। তার থেকেই সমস্ত কিছু প্রকাশিত হচ্ছে। একাদশ রুদ্রের মধ্যে শিব অন্যতম। শ্রী শিব পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে সৃষ্টি হন।
সে সম্পর্কে মহা উপনিষদে আরও বলা হয়েছে যে,
শিবের জন্ম হয় পরমেশ্বর ভগবানের ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে।এভাবেই বেদে বলা হয়েছে যে,ব্রহ্মা ও শিবের যিনি সৃষ্টিকর্তা সেই পরমেশ্বর ভগবানই হচ্ছেন সকলের
আরাধ্য।
মোক্ষধর্মে শ্রীকৃষ্ণও বলেছেন,
প্রজাপতিং চ রুদ্রং চাহ্যহমেব সৃজামি বৈ।
তৌ হি মাং ন বিজানীতো মম মায়াবিমোহিতৌ।।
অর্থ: প্রজাপতি, রুদ্র ও অন্য সকলকে আমি সৃষ্টি করেছি,যদিও তারা তা জানেন না।কারন,তাঁরা আমার মায়াশক্তির দ্বারা বিমোহিত।
বরাহ পুরাণেও বলা হয়েছে -----
নারায়ণ:পরো দেবস্তস্মাজ্জাতশ্চতুর্মুখ:।
তস্মাত্ রুদ্রোহভবদ্ দেব:স চ সর্বজ্ঞতাং গত:।।
অর্থ: নারায়ন হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান আর তার থেকে ব্রহ্মারও জন্ম হয়, তার থেকে শিবের
জন্ম হয়।
বেদে আরও বলা হয়েছে,
ব্রম্মণ্যো দেবকীপুত্র :।
অর্থাৎ, দেবকীপুত্র শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান।
(নারায়ন উপনিষদ ৪)
তারপর বলা হয়েছে,
একো বৈ নারায়ন আসীন্ ন ব্রম্ম না ঈশানো নাপো নাগ্নি -সমৌ নেমে দ্যাবা পৃথিবী ন নক্ষত্রাণি ন সূর্য।
অর্থাৎ, সৃষ্টির আদিতে কেবল পরম পুরুষ নারায়ন ছিলেন।ব্রম্মা ছিল না,শিব ছিল না, অগ্নি ছিল না,চন্দ্র ছিল না,আকাশে নক্ষত্র ছিল না এবং সূর্য ছিল না। ( মহা উপনিষদ-১)।
গীতাতে আরও বলা হয়েছে,
পরং ব্রহ্ম পরং ধাম পবিত্রং পরমং ভবান্।
পুরুষং শাশ্বতং দিব্যমাদিদেবমজং বিভূম।।
আহুস্তামৃষয়:সর্বে দেবর্ষির্নারিদস্তথা।
অসিতো দেবলো ব্যাস:স্বয়ং চৈব ব্রবীষি যে।(গীতা১০/১২-১৩)
অর্থ: অর্জুন বললেন,তুমি পরম ব্রহ্ম,পরম ধাম,পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ। তুমি নিত্য,দিব্য আদি দেব,অজ ও বিভূ।দেবর্ষি নারদ,অসিত,দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করেছেন। এবং তুমি নিজেও এখন তা আমাকে বলছো।
মুর্খেরা এখনও কি পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে নিন্দা করবেন নাকি মানুষ বলবেন। শ্রীকৃষ্ণ সকল আরাধ্যেও আরাধ্য, তিনিই পরমাত্মা। নাস্তিক পন্থি অজ্ঞ শৈবরা সঠিক তত্ত্ব না জেনে পরমেশ্বরকে নিন্দা করে।
আপনাদের পরমচৈতন্য স্বরূপ তথা পরব্রহ্ম ওমকার স্বরূপ সদাশিব - এর সাথে শত্রুতা কীসের? আমরা সকলে তো তার ই অংশ
উত্তরমুছুনএই পোস্ট টা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা
উত্তরমুছুন