কুচক্রি শৈবদের অপপ্রচার

কিছু শাস্ত্রজ্ঞানহীন শৈবগণ বেদ, গীতাসহ সকল শাস্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার প্রচার করছে। আবার তারা গীতার প্রকৃত অর্থ না বুঝে নিজস্ব ইচ্ছামত অর্থ প্রয়োগ করছে।

সেই সকল অজ্ঞ শৈবগণের বেদ নিয়ে মিথ্যাচার দেখা যাকঃ
শৈবগণের মধ্যে একজনের দাবী যজুর্বেদের ১৬/৪ এ বলা হয়েছে,
" নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।।"

এবার দেখা যাক যজুর্বেদের ১৬/৪ এ কি আছে,
"শিবেন বচসা ত্বা গিরিশাচ্ছা বদামসি। যথাঃ নঃ সর্বমিজ্জগদযক্ষ্মং সুমনা অসৎ।।"
অর্থঃ হে গিরিশ, মঙ্গলময় স্তুতি বাক্যে তোমায় পাবার জন্য প্রার্থনা জানাই যাতে জগতের সকলে নীরোগ ও শোভনমনস্ক হয়।"

এখানে উল্লেখ্য বিষয় হল, যে শৈব উপরোক্ত বর্ণিত যজুর্বেদ ১৬/৪ এ যে মন্ত্রটি বলেছেন, সেই মন্ত্র বেদে নেই। ঐ স্থানে এমন কোনো মন্ত্রের চিহ্নমাত্র নাই। তাহলে ভাবুন এই শৈবগণ কতটা মিথ্যাচার করছে বেদ নিয়ে।

এবার আরেক শৈবের বেদ নিয়ে মিথ্যাচার দেখা যাকঃ

এই শৈব ভ্রাতার দাবী হাস্যকর, সেটা একটু পরেই বুঝতে পারবেন পাঠকগণ। ইনি যজুর্বেদের ১৬/২ এ এটি পেয়েছেন,,
"কোটিজন্মার্জিতৈঃ প্যূণ্যৈঃ শিবে ভক্তিঃ প্রজায়তে।"

----কোটিজন্মার্জিত পূণ্যের ফলে শিবে ভক্তি জন্মায়।

এবার দেখা যাক যজুর্বেদের ১৬/২ এ কি বলা হয়েছে,,
" যা তে রুদ্র শিবা তনুরঘোরাহ পাপকাশিনী। তয়া নস্তদ্বা শন্তময়া গিরিশদ্তাভি চাকণীহি।।"

অর্থঃ হে রুদ্র, তোমার যে মঙ্গলময়, সৌম্য, পুণ্যপ্রদ শরীর আছে, হে গিরিশ, সে সুখতম শরীরের দ্বারা আমাদের দিকে তাকাও।।"

অর্থাৎ, শৈবগণ যজুর্বেদের যে সকল মন্ত্রের নির্দেশ দিলেন। সেগুলো তাদের মিথ্যাচার। তারা বেদ পড়েই নি এবং উল্লিখিত মন্ত্র সমুহ বেদ থেকে যাচাই করারও চেষ্ঠা করেন নি। এসকল শৈবগণ বেদজ্ঞানহীন এবং সাধারণ মানুষকে বেদের মিথ্যাচার দ্বারা ব্রেনওয়াশের চেষ্ঠা করছে।

যে মহাত্মা শৈব ভ্রাতা যজুর্বেদের ১৬/২ মন্ত্রের মিথ্যাচার করলেন, এটি প্রকৃতপক্ষে কোথায় আছে দেখে নেওয়া যাকঃ
শিবগীতা ১/১৬ তে এটি পাওয়া যায়,
 কোটিজন্মার্জিতৈঃ প্যূণ্যৈঃ শিবে ভক্তিঃ প্রজায়তে।
---কোটিজন্মার্জিত পূণ্যের ফলে শিবে ভক্তি জন্মায়।

পাঠকগণ দেখুন, শৈবগণ কতটা মিথ্যাচার করছে। এরা আদৌ কি সাধু নাকি অসাধু??

আবার শৈবগণের দাবী, বেদে শিব শব্দ দ্বারা শিবকেই বোঝানো হয়েছে। কিন্তু বেদের মন্ত্রসমুহ এবং অর্থের তাৎপর্য করলেই বোঝা যায় বেদে শিব অর্থ মঙ্গলময় এবং সেই অর্থে বেদে শিব নেই। কিন্তু রুদ্র আছে, এই রুদ্রই পরবর্তীতে নিজেকে ১১ টি রুপে বিভক্ত করেন। সেই একাদশ রুদ্রের মধ্যে শিব অন্যতম।

ধরুন, এক ব্যক্তির নাম সৌরভ আবার সৌরভ এর অর্থ সুগন্ধ। ফুলেরও সৌরভ আছে, কিন্তু ফুলের এই সুগন্ধকেই ফুলের সৌরভ বলা হয়ে থাকে, সেই ব্যক্তিকে ফুলের সৌরভ বলা হয় না। তদ্রুপ, শিব অর্থ মঙ্গলময়, বেদে মঙ্গলসূচক কিছুকে শিব বলা হয়েছে, কিন্তু শ্রী শিবকে বেদে শিব শব্দ দ্বারা উল্লেখ করেনি।

এসকল অসাধু শৈবগণ মিথ্যার প্রচবণ দ্বারা সকলকে ভ্রান্ত পথে নেওয়ার চেষ্ঠা চালাচ্ছে।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পরম বৈষ্ণব শিব

বেশধারী শৈব (পর্ব ২)

অভিশপ্ত শৈব